ব্রেকিং নিউজ
শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক: সমুদ্রে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে আগামী মার্চের প্রথম সপ্তাহে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করতে যাচ্ছে পেট্রোবাংলা। এতে অংশ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি শেভরন। যুক্তরাষ্ট্রের আরেক কোম্পানি এক্সন মবিলের প্রতিনিধি দল সাগরের তেল-গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে আলোচনা করতে ঢাকায় এসেছে। এক্সনের দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল গতকাল মঙ্গলবার জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সাথে বৈঠক করেন। প্রতিমন্ত্রী তাদেরকে দরপত্রে অংশ নিতে বলেছেন।
বৈঠক শেষে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, গভীর সমুদ্রের ১৫টি ব্লকে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে এক্সন মবিল কাজ করতে চায়। আমরা তাদেরকে বলেছি দরপত্রে অংশ নিতে। মার্কিন কোম্পানি দরপত্রে অংশ নিবে কি না এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কিছু জানায়নি। তবে তারা জানিয়েছে আলোচনা করে এ বিষয়ে জানাবে।
বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য গত বছরের মার্চে প্রথম আগ্রহ প্রকাশ করে এক্সন মবিল। সে সময় তারা গভীর সমুদ্রের ১৫টি ব্লক ইজারা চেয়েছিল। এ নিয়ে কয়েক দফা চিঠিও দেয় মার্কিন কোম্পানিটি। সরকারের ঊর্ধতন মহলের সাথে তাদের আলোচনাও হয়। তবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের কারণে এ আলোচনে থমকে থাকে।
ইতোমধ্যে বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ অংশের দ্বিমাত্রিক জরিপের ডেটা বিশ্লেষণ শেষ করেছে জার্মানির স্লাম বার্জার। মডেল উৎপাদন বন্টন চুক্তি (পিএসসি) সংশোধন করে গ্যাসের দাম এবং বিদেশি কোম্পানির হিস্যা বাড়ানো হয়েছে। মার্চের প্রথম সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে ২৬টি ব্লক ইজারা দিতে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করবে পেট্রোবাংলা। এ কার্যক্রমে অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই ২৬টি ব্লকের মধ্যে ১১টি অগভীর এবং বাকী ১৫টি গভীর সমুদ্রে। এক্সন ১৫ টি ব্লক সরাসরি ইজারা চাইলেও সরকার দরপত্রের মাধ্যে ব্লক ইজারা দিতে আগ্রহী। স্লাম বার্জারের কাছ থেকে বঙ্গোপসাগরের দ্বিমাত্রিক জরিপের ডেটা কিনেছেন বলে জানিয়েছেন শেভরন বাংলাদেশ প্রেসিডেন্ট এরিক ওয়াকার। তিনি জানান তারা দরপত্রে অংশ নেবেন।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন পিএসসি সংশোধনের কারণে অনেক কোম্পানি সমুদ্রে কাজে আগ্রহী হচ্ছে।
বর্তমানে শুধু ভারতের কোম্পানি ওএনজিসি অগভীর সমুদ্রের দুটো ব্লকে কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি কনোকোফিলিপস, কেয়ার্নস, দক্ষিণ কোরিয়ার দাইয়ু বঙ্গোপসাগরে অনুসন্ধান শুরু করলে কাজ শেষ না করেই চলে গেছে। তারা গভীর সমুদ্রে প্রাপ্ত গ্যাসের দাম বৃদ্ধির দাবি তুলেছিল। তা মেনে না নেওয়ায় কোম্পানিগুলো চলে গেছে। এর মধ্যে একাধিকবার আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের উদ্যোগ নেওয়া হলেও বিদেশি কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে তেমন সাড়া মেলেনি।
এরপরই সরকার মডেল পিএসসি সংশোধন করে । ২০১৯ সালের মডেল পিএসসি অনুযায়ী, অগভীর ও গভীর সমুদ্রের প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের দাম যথাক্রমে ৫ দশমিক ৬ ও ৭ দশমিক ২৫ ডলার। সংশোধিত পিএসসিতে প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের দাম ধরা হয়েছে ব্রেন্ড ক্রুডের ১০ শতাংশ দরের সমান। অর্থাৎ বিশ্ববাজারে ক্রুডের দাম ১০০ ডলার হলে গ্যাসের দাম হবে ১০ ডলার। বর্তমান পিএসসি অনুসারে অগভীর সমুদ্রে পাওয়া গ্যাসে বাংলাদেশের হিস্যা ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ এবং গভীর সমুদ্রে ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ রয়েছে। সংশোধিত পিএসসির খসড়ায় বাংলাদেশের হিস্যার অংশ অগভীর সমুদ্রে ৪০ থেকে ৬৫ শতাংশ এবং গভীর সমুদ্রে ৩৫ থেকে ৬০ শতাংশের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। পাশাপাশি রাখা হয়েছে গ্যাস রপ্তানির সুযোগ।