২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১২:৪৮

ব্রেকিং নিউজ

শিরোনাম

আজ পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৪ ৫:২৭ পূর্বাহ্ণ
Print Friendly and PDF

সম্পাদকীয় ডেক্স: প্রকৃতিতে বসন্ত আর ভালোবাসা যেন একে-অন্যের পরিপূরক। পহেলা ফাল্গুনে বসন্ত উৎসবের রঙে মেতে ওঠে তরুণ হৃদয়; নতুন করে প্রাণ পায় প্রবীণরা। বসন্তে শুধু প্রকৃতিই নয়, হৃদয়ও রঙিন হয়ে ওঠে। তাই তো বসন্ত আমাদের কাছে ‘প্রেমের ঋতু’। এ উৎসবটির একটি ঐতিহ্যময় ইতিহাস আছে। ১৫৮৫ সালে মোগল সম্রাট আকবর ১৪টি উৎসবের প্রবর্তন করেছিলেন। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ‘বসন্ত উৎসব’।

 

আজ পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। দুই উৎসবকে ঘিরে জোড়া উৎসবের আমেজ। ঋতুরাজ বসন্ত এলেই বাঙালি সংস্কৃতি মেতে ওঠে ভিন্ন আঙ্গিকে। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে পরিবর্তন আনায় পহেলা ফাল্গুন ও ভালবাসা দিবস একদিনেই উদযাপন করছেন উৎসবপ্রিয় বাঙালি।

 

প্রকৃতিতে বসন্ত আর ভালোবাসা যেন একে-অন্যের পরিপূরক। পহেলা ফাল্গুনে বসন্ত উৎসবের রঙে মেতে ওঠে তরুণ হৃদয়; নতুন করে প্রাণ পায় প্রবীণরা। বসন্তে শুধু প্রকৃতিই নয়, হৃদয়ও রঙিন হয়ে ওঠে। তাই তো বসন্ত আমাদের কাছে ‘প্রেমের ঋতু’। এ উৎসবটির একটি ঐতিহ্যময় ইতিহাস আছে। ১৫৮৫ সালে মোগল সম্রাট আকবর ১৪টি উৎসবের প্রবর্তন করেছিলেন। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ‘বসন্ত উৎসব’।

 

কী নেই বসন্তের! আছে রং, রূপ, রস ও লাবণ্য। আছে মাতাল দখিনা সমীরণ। ঋতুরাজের আগমনে খুলে গেছে দখিনা দুয়ার। মানব-মানবীর চিরন্তন ভালোবাসা উড়ছে রঙিন প্রজাপতি হয়ে। ফুলে ফুলে আছে মৌমাছির গুঞ্জন। নতুন প্রাণের পত্রপল্লবে জেগে উঠেছে বৃক্ষ-লতাণ্ডগুল্ম। নদীর কিনার থেকে আদিগন্ত প্রান্তর, কুঞ্জবন, অরণ্য-পর্বতে ডেকেছে নবযৌবনের বান। প্রকৃতির এ রূপতরঙ্গ দেখেই কবিগুরু লিখেছিলেন, ‘ওরে ভাই, ফাগুন লেগেছে বনে বনে।’

 

পশ্চিমের ভ্যালেনটাইন্স ডে বা ভালোবাসা দিবসের ধারণা এসে মিলেছে আমাদের বসন্তে। বাংলা একাডেমি পঞ্জিকা সংশোধনের পর এখন পহেলা ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবস একই দিনে উদযাপিত হয়। ভালোবাসার মানুষকে আরো কাছে পাওয়ার সময় এ বসন্ত। বসন্ত আসে তরুণের পোশাকে, মননে, সংগীতে। বাঁধনহারা মন এ সময় গেয়ে ওঠে, ‘মধুর বসন্ত এসেছে মধুর মিলন ঘটাতে।’ তবে বসন্ত শুধু প্রেমের ঋতু নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাঙালির দ্রোহের ইতিহাসও। এমনই এক বসন্তে বাঙালি ভাষার জন্য আন্দোলন করেছিল।

 

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি ছিল ৮ ফাল্গুন। সেদিন মাতৃভাষার মর্যাদা রাখতে জীবন দিয়েছিলেন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর। ঋতুরাজ বসন্ত তাই প্রেম, আনন্দ, ভালোবাসা, প্রতিবাদ আর তারুণ্যের প্রতীক। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের হাত ধরে বাঙালি করেছে বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলন আর ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ। সেদিক থেকে দেখতে গেলে বসন্তে রোপিত হয়েছিল বাংলাদেশের জন্মের বীজ। তেমনি আশির দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এক চূড়ান্ত রূপ নিয়েছিল এমনই এক বসন্তে।

 

১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রাণ দিয়েছিলেন জাফর, জয়নাল, মোজাম্মেল, আইয়ুব, কাঞ্চন, দিপালীরা। সেই আন্দোলনের পথ বেয়ে নব্বইয়ে বাংলাদেশ পেয়েছিল গণতন্ত্রের স্বাদ। দ্রোহ হোক বা প্রেম, বসন্ত আমাদের জীবনে বয়ে নিয়ে আসে নতুন আশা। রুক্ষ শীত শেষে বসন্তের আগমনে প্রকৃতিতে জাগে নতুন আনন্দ। অথচ সময়টা মলিন। করোনা মহামারির একের পর এক ঢেউ আমাদের শঙ্কিত মনকে বিবর্ণ করে তুলেছে। বসন্তকে তাই আরো বেশি প্রয়োজন এখন। এবারের বসন্ত নতুন জীবনীশক্তিতে প্রকৃতি ও প্রাণকে ভরিয়ে তুলুক। বসন্তের দোলা লাগুক বনে, মনে। উল্লসিত মন গেয়ে উঠুক, ‘আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে।’

Logo

<div class="fb-share-button" data-href="” data-layout=”button” data-size=”small”>